বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২০ অপরাহ্ন
তরফ স্পোর্টস ডেস্ক : চলমান কোপা আমেরিকার ফাইনাল ৭ জুলাই। মারাকানায়। সেটা কাগজে-কলমের কথা। দর্শক মন, হৃদয় ও চাহিদার ফাইনাল কিন্তু আগামীকাল ভোরেই। টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে বাংলাদেশ সময় কাল ভোর সাড়ে ৬টায় মুখোমুখি হচ্ছে দুই চিরশত্রু ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। তর্কাতীতভাবে বিশ্বের সেরা এ লড়াই ‘সুপার ক্লাসিকো’ নামে পরিচিত। যা নিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত হয় পুরো বিশ্ব। ধ্রুপদী এ দ্বৈরথ দিয়েই আসরে কে সেরা তা প্রমাণ হয়ে যাবে। আগামীকালের জয়ী দলই কি শিরোপা জিতবে! তা অবশ্য ফাইনালেই জানা যাবে।
যেকোনো টুর্নামেন্টে এ দুই দলের লড়াই সবসময়ই আকর্ষণীয়। তা নকআউটে হলে হয় অলিখিত ফাইনাল। কোপায় দুই দলের সর্বশেষ দুটি লড়াই-ই ছিল ফাইনালে। ২০০৪ ও ’০৭ টানা দুই টুর্নামেন্টে ফাইনাল খেলেছিল ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। দুবারই চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ২০০৪ সালে পেরুর আসরে ফাইনাল ২-২ গোলে ড্র হয়। পেনাল্টিতে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ ব্যবধানে হারায় সেলেকাওরা। পরের আসরে ভেনেজুয়েলায় আবারও ফাইনালে দেখা দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর। সেবার ব্রাজিলের কাছে আর্জেন্টিনার হার ৩-০ গোলের। ১৯৯২ থেকে ১২ দলের কোপা শুরুর পর নকআউটে ওই দুবারই মুখোমুখি হয়েছিল দুই সুপার জায়ান্ট। আগামীকাল আরেকটি লড়াইয়ে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট কার মাথায় উঠছে? ব্রাজিল নবম কোপার পথে একধাপ এগোবে না উরুগুয়ের সমান সর্বোচ্চ ১৫ শিরোপার কাছাকাছি যাবে আর্জেন্টিনা?
চলতি আসরে রক্ষণে সেরা হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে স্বাগতিক ব্রাজিল। চার ম্যাচে এক গোলও হজম করেনি। বিপরীতে চার ম্যাচে আট গোল দিয়েছে। চার ম্যাচের দুটি ছিল গোলশূন্য ড্র। বাকি দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষকে মোট আট গোল দিয়েছে স্বাগতিকরা। এদিকে আর্জেন্টিনা তাদের চার ম্যাচে গোল করেছে পাঁচটি, হজম করেছে তিনটি। সর্বশেষ দুই ম্যাচে বদলে যাওয়া আলবিসেলেস্তেরা দুটি করে চার গোল দিয়েছে প্রতিপক্ষকে।
ব্রাজিল স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল জেসুস অবশ্য হুঙ্কার ছাড়লেন তাদের ডিফেন্সের বিপক্ষে পরীক্ষা দিতে হবে আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ডদের। ম্যাচ-পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে জেসুস জানান, মেসিদের এক ইঞ্চিও ছাড় দেবে না ব্রাজিলের রক্ষণভাগ, ‘টুর্নামেন্টে আমরা এখনো গোল হজম করিনি। আর সবাই জানে, এমন একটি ডিফেন্সের সঙ্গে পেরে ওঠা কঠিন। বিপক্ষের জালে যতই গোল দিন না কেন, নিজেদের জাল অক্ষত রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আর এটা আমরা সর্বশেষ অনেক ম্যাচে করে আসছি। তাই আর্জেন্টিনার জন্য আমাদের ডিফেন্স অতিক্রম করা সহজ হবে না। অবশ্যই বিশ্বের সেরা ফুটবলার তাদের দলে এবং বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকার আগুয়েরোও তাদের। তবুও আমাদের রক্ষণভাগকে টপকাতে তাদের ঘাম ঝরাতে হবে।’
জাতীয় দলের হয়ে একটি শিরোপার খোঁজে থাকা লিওনেল মেসি দীর্ঘদিন ধরেই আর্জেন্টিনাকে টানছেন। যেকোনো টুর্নামেন্টে দলের সেরা পারফরমারও নিজেই। কিন্তু এ আসরে পুরনো মেসিকে পাওয়া যাচ্ছে না। তবুও ব্রাজিলের ভয় তাকে নিয়েই। ব্রাজিলের বিপক্ষে মেসির সেরা পারফরম্যান্স ২০১২-তে। আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে সেদিন হ্যাটট্রিক করেছিলেন। তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে ওই পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারেননি মেসি। সর্বশেষ নয় ম্যাচে মাত্র চারটি গোল তার। এছাড়া বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব বা কোপা আমেরিকার কোনো লড়াইয়েই ব্রাজিলের জালে বল পাঠাতে ব্যর্থ। আগামীকালের লড়াইয়ে ব্রাজিলের সঙ্গে পাঁচবারের বর্ষসেরা তারকা নিজের এই অভাববোধ দূর করতে পারবেন! সেটা এখন প্রশ্নের বিষয়! টুর্নামেন্টে জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় থাকা মেসি আসরের সেরা ম্যাচটিতেই নিজেকে মেলে ধরবেন। যা আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেবে ১৯৯৩-এর পর প্রথম শিরোপার দিকে আর মেসিকেও দেশের হয়ে প্রথম অর্জনের দিকে।